১.
আজ রাতে আরিফ ওর বাবা আর মা খেতে বসেছে। খাওয়া শেষে ইকবাল হোসেন আরিফকে বললেন, “একটু পরে আমার ঘরে আসিস কিছু কথা আছে।”
আরিফ একটু অবাক হলো! কোনোদিন ওর বাবা এভাবে ওকে ডাকেননি। আরিফ বুঝতে পালো না ওর বাবা ওকে কেন ডাকলেন।
কিছুক্ষণ বাদে আরিফ ওর বাবার ঘরে গেল। ইকবাল হোসেন অনেক ঠান্ডা মাথার মানুষ। ওনার বেশি রাগ নেই, কারুর সাথে কোনোদিন রাগ দেখিয়ে কথা বলেন না। আরিফ ঘরে ঢুকতেই তিনি আরিফকে তার পাশে বসতে বললেন।
“আজকে সাজোয়া ব্রিজের নিচে গেছিলি?”
আরিফ একটু ভয় পাওয়া গলায় উত্তর দিলো, “হ্যা বাবা!”
“আতিক, আসাদ আর খালিদও ছিলো সাথে?”
“হ্যা বাবা!”
“তোরা নাকি বিড়ি খাচ্ছিলি?”
আরিফের মুখে কোনো কথা নেই। আরিফের চোখের কোনায় পানি জমতে শুরু করেছে। আরিফের বাবা বললেন,“কাদিস না বাবা! আমি বুঝতে পারছি তুই নিজেকে সামলাতে পারছিস না। কিন্তু তোকে নিজেকে তো সামলাতে হবে। সিগারেট খাওয়া তো হারাম। তুই কী সেটা জানিস না?”
“জানি বাবা। আমায় মাফ করে দিও বাবা। আমি অনেক চেষ্টা করেছি এটা না খাওয়া জন্যে কিন্তু আমি পারিনি।”
“তুই কী সিগারেট খাওয়া ছাড়তে চাস না?”
“চাই বাবা!”
“আমি যা বলবো করতে পারবি?”
“চেষ্টা করবো বাবা ।”
“চেষ্টা করবো ! ব্যাস ? বলবি ইনশাআল্লাহ।”
“ইনশাআল্লাহ বাবা।”
“হ্যা এবার ঠিক আছে।”
“কিন্তু কী করতে হবে আমায় বাবা?”
“কাল সকালে উঠতে পারবি?”
“কত সকালে ?”
“যত সকালে পারিস! ফজরের আজান কানে পরলেই।”
“হুম, পরবো।”
“উহু! হলো না তো !”
“ইনশাআল্লাহ পারবো !”
“হ্যা এইবার হয়েছে। যা এখন ঘুমিয়ে পর। আর মনে রাখিস, মানুষের মস্তিষ্ক কিন্তু জটিল জিনিস। ঘুমানোর আগে যদি ভেবে নিস যে আমায় সকালে উঠতেই হবে তাহলে দেখবি ঠিক সকালে জেগে গেছিস। জেগে যাওয়ার পরে তোকে শয়তানের সাথে লড়তে হবে। শয়তান তোকে শান্তির কম্বলের নিচ থেকে বেড়োতে দেবে না। এবার যা ঘুমিয়ে পড়।”
২.
সকালের বাতাসটা কত ফুরফুরে! হবে না বাই কেন? সকালের বাতাসে তো মোনাফিকদের নাকের দুর্গন্ধ মিশে না। এই ধরা দেখছে ছেলে আর বাবা পাশাপাশি হেটে হেটে মসজিদের দিকে ছুটছে!